যদি আপনি দক্ষ কর্মী হিসেবে বৈধ উপায়ে বিদেশে কাজের সন্ধানে যেতে চান তবে যাওয়ার আগে অবশ্যই জানা উচিত কিভাবে উন্নত দেশসমূহ তাদের শ্রমবাজারের চাহিদা মিটাতে স্বল্পোন্নত বা উন্নয়নশীল দেশ থেকে কর্মী নিয়োগ করে থাকে। তাই এ ব্লগ পোস্টটিতে আপনাদের জন্যে থাকছে বাংলাদেশের ম্যানপাওয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি কিভাবে বিদেশে দক্ষ শ্রমিক রপ্তানি করে থাকে।
বিদেশ যাওয়ার এজেন্সি কিভাবে কাজ করে?
বিদেশে যাওয়ার এজেন্সি তথা ম্যানপাওয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি কিভাবে কাজ করে তা বুঝতে হলে প্রথমে আপনাকে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে শ্রমিক আমদানি/ রপ্তানির প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে হবে।
শ্রমিক আমদানি/ রপ্তানি করার প্রক্রিয়াঃ
কোন দেশ থেকে শ্রমিক আমদানির প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল। মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কিছু উন্নত দেশ এবং পশ্চিমের উন্নত দেশসমূহ তাদের দেশের শ্রমিকের ঘাটতি পূরণ করতে বাংলাদশের মতো স্বল্পোন্নত বা উন্নয়নশীল দেশ থকে জনশক্তি আমদানি করে থাকে।
আন্তর্জাতিক শ্রমিক আইন অনুসারে, কোন দেশ অন্য দেশ থেকে সরাসরি শ্রমিক আমদানি করতে পারে না। আন্তর্জাতিক আইনি জটিলতা এড়িয়ে দক্ষ কর্মী আমদানির প্রক্রিয়াটি বেশ দীর্ঘ। শ্রমিক আমদানির প্রথম ধাপটি হচ্ছে যে দেশ থেকে শ্রমিক আমদানি করতে ইচ্ছুক, সে দেশের সরকারের সাথে শ্রমিকদের সকল স্বার্থ রক্ষার জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করতে হয়।
পরবর্তীতে শ্রমিক আমদানির জন্য উন্নত দেশের কোম্পানিগুলো এই নীতিমালা অনুসরণ করে সল্পোন্নত দেশের সরকারের মাধ্যমে ম্যানপাওয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি নিয়োগ করে। কোম্পানিগুলো চাহিদা অনুসারে এই নিয়োগকৃত ম্যানপাওয়ার এজেন্সীগুলোকে দক্ষতা অনুযায়ী শ্রমিক বাছাই করার সুযোগ দিয়ে থাকে।
ভিসার মেয়াদ নির্ধারণ, মাসিক বেতন, বিদেশে বাসস্থান ইত্যাদি চুক্তির অধীনে রেখে শ্রমিক নিয়োগ করার প্রক্রিয়াটি এগিয়ে যায়। এরপর ম্যানপাওয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি কাজের ধরণ অনুযায়ী যোগ্য কর্মী বাছাই করে এসব কোম্পানিতে কাজের জন্য আবেদন করেন। কোম্পানিগুলো কর্মীদের তথ্য যাচাই বাছাই করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানালে তখন ম্যানপাওয়ার এজেন্সি নির্দিষ্ট দেশের এম্বাসীতে ভিসার জন্য আবেদন করেন।
এরপর কর্মীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো, যথাযথ কাজের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান ইত্যাদি কাজ সম্পন্ন করেন। এর মধ্যেই ভিসা আবেদন গ্রহণ হলে এজেন্সিগুলো বিমানের টিকিট ক্রয়সহ বাকী কাজগুলোও দ্রুততম সময়ের মাধ্যমে সম্পাদন করে শ্রমিক রপ্তানির সর্বশেষ ধাপটি সম্পন্ন করেন। একজন কর্মী কেবল তখনই চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়ে কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশের পথে পাড়ি জমিয়ে থাকেন।
কেন ভিসার দাম বৃদ্ধি পায়?
কোন দেশ বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আমদানি করতে চাইলে প্রথমে বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে জানায়। মন্ত্রণালয় বিভিন্ন যাচাই বাছাই শেষে যখন অনুমতি দেয় তখনই কেবল কোন দেশ বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আমদানি করতে পারে।
কিন্তু উন্নত বিশ্বে শ্রমিকের ব্যাপক চাহিদা থাকায় কেবলমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় একার পক্ষে নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে কাঙ্খিত পরিমাণ শ্রমিক কাজের জন্য পাঠাতে পারে না। এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক অর্থ উপার্জন থেকে রাষ্ট্র বঞ্চিত হওয়ার আশংকা দেখা দেয়।
তাছাড়া বিভিন্ন জটিলতার জন্য বেসরকারী বিদেশী কোম্পানি গুলোর জন্য সরকারী ভাবে শ্রমিক আমদানী করাটাও বেশ সময় সাপেক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে অতিরিক্ত এ চাহিদা মেটানোর জন্য বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ সরকার স্বীকৃত বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিকেও কর্মী প্রেরণের দায়িত্ব অর্পণ করে থাকে।
ক্রমবর্ধান দক্ষ কর্মীর চাহিদা পূরণের জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট তৈরি, ভিসা আবেদন করা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো, প্রয়োজন অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, বিমানের টিকিট ক্রয়সহ সকল ব্যয় একজন কর্মীকে বহন করতে হয়। দ্রুতসময়ের মধ্যে বিদেশে পাড়ি জমাতে হলে তাই কাজের ভিসার দাম বিভিন্নসময়ে বৃদ্ধি পায়। করোনা মহামারী, যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির অবস্থা বেগতিক হওয়া সহ ইত্যাদি কারণেও ভিসার দাম বৃদ্ধি পায়।
কিভাবে বুঝবেন রিক্রুটিং এজেন্সির বৈধতা রয়েছে?
সরকার নিবন্ধিত বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির বৈধতা যাচায়ের জন্য আপনি যে কয়টি বিষয় অবশ্যই অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে পারেন সেগুলো হলঃ
জেলা জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো অফিস থেকে তথ্য যাচাইঃ
বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মাধ্যমে ম্যনপাওয়ার রিক্রুটিং এজেন্সির বৈধতা প্রদান করে । বর্তমানে ব্যাংলাদেশের ৪২ টি জেলায় জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর শাখা অফিস রয়েছে। অতএব, আপনি যদি ঢাকার বাইরে অবস্থান করেন সেক্ষেত্রে নিজ জেলার জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অফিসে উপস্থিত হয়ে নির্দিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির বৈধতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন। যেমনঃ কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস ঢাকার ঠিকানা হচ্ছে ৮৯/২, কাকরাইল, ঢাকা – ১০০০।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো নতুন কোন রিক্রুটিং এজেন্সকে বৈধতা বা লাইসেন্স প্রদান করলে তার তথ্য নোটিশের মাধ্যমে Bureau of Manpower, Employment and Training – BMET ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। এভাবে আপনি বিএমইটির ওয়েবসাইট থেকেও যে এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশ যেতে চাচ্ছেন তার বৈধতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন। অপরদিকে যদি কোন কারণে কোন রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল করা হয়, সে তথ্যও ওয়েবসাইটটিতে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি থেকে তথ্য যাচাইঃ
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি বা সংক্ষেপে BAIRA হচ্ছে বাংলাদেশের দক্ষ, প্রশিক্ষিত এবং প্রযুক্তিগতভাবে শিক্ষিত জনশক্তিকে সহযোগিতা করার জন্য একটি সংঘ। বাংলাদেশের সকল বৈধ ম্যানপাওয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি বায়রার সদস্য। আপনি চাইলে বায়রার ওয়েবসাইটে রিক্রুটিং লাইসেন্স নাম্বার প্রবেশ করিয়েও বৈধতা যাচাই করতে পারবেন।
সরকারিভাবে বিদেশের পথে পাড়ি জমাতে চাইলে বিএমইটির রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে নিজ জেলার জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরো অফিসে যোগাযোগ করুন। সেখান থেকে সঠিক দিক নির্দেশনা অনুসরণ করে বৈধপথে বিদেশের পথে পাড়ি জমান। অথবা পাড়া – প্রতিবেশী, স্বল্প পরিচিত, দূরের আত্মীয়ের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে বৈধপথে বিদেশে আয়ের জন্য যেতে চাইলে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক স্বীকৃত বৈধ রিক্ট্রুটিং এজেন্সিতে যাবতীয় তথ্যের জন্যও যোগাযোগ করতে পারেন।
শেষকথাঃ
বাংলাদেশের সেরা ম্যানপাওয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি হিসেবে জেজি আলফালাহ ম্যানেজমেন্ট দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন দেশের বেশ কিছু পরিচিত কোম্পানিগুলোর সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে চাহিদানুযায়ী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী প্রেরণ করে আসছে। অল্প খরচে বিদেশে চাকরির জন্য দালালের কবলে পরে স্বর্বশান্ত না হতে চাইলে আজই যোগাযোগ করুন +8801321145901 নাম্বারে।
Leave a Reply